তৌহিদ আফ্রিদি কত টাকা আয় করেন | গার্লফ্রেন্ড | লেখাপড়া | বয়স | অজনা তথ্য | Tawhid Afridi lifestyle


লক্ষ্য তার একটাই, ভালো কিছু। হতে চায় দেশের প্রথম পাঁচজন জনপ্রিয় ইউটিউবারদের একজন। দেশ সেরা হতেও কোনো আপত্তি নেই, যদি সেই সার্টিফিকেট দেয় দেশের মানুষ, ইউটিউব দেখা দর্শক আর ভক্তরা। এমন চিন্তা নিয়েই এগিয়ে চলেছেন দেশের অন্যতম ও জনপ্রিয় ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদী। স্বপ্ন একটাই ইউটিউব। বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা। আর যে ক’জন দেশসেরা ইউটিউবার আছে তাদের নিয়েই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সঙ্গে পথচলা। প্রতিযোগিতা করে নয় নিজের কাজকে গুরুত্ব দিয়ে, নিজের প্রতিভা ও বুদ্ধিমত্তায় প্রতিষ্ঠিত হতে চান তরুণ এ ইউটিউবার। লিখেছেন নাজমুল হক ইমন

২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে ‘তৌহিদ আফ্রিদী’ নামের চ্যানেলটির যাত্রা শুরু হলেও সে বছর ১৬ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে বেশ কিছু কাজ করলেও মাঝখানে বিভিন্ন কারণে আবারো কার্যক্রম শিথিল হয়ে পড়ে। কিন্তু ২০১৬ সালের শেষ দিকে আবারো নতুন উদ্যমে, নতুন উদ্যোগে পথচলা শুরু করে ‘তৌহিদ আফ্রিদী’ নামের এই চ্যানেলটি। এছাড়া বর্তমানে দেশে যে কয়েকজন ইউটিউবার আছে নতুন হিসেবে তৌহিদ আফ্রিদী বেশ জনপ্রিয়।
আফ্রিদী নিজেই বললেন ইউটিউবার হয়ে ওঠা ও ইউটিউব নিয়ে কাজ করার গল্প-
এক সময় মানুষ বলত ভালো হচ্ছে না, হচ্ছে না, হচ্ছে না। এই না, না, না থেকে হঠাৎ করেই কেমন জানি হ্যাঁ, হ্যাঁ, ভালো, ভালো, ভালোতে হতে পরিণত হয়ে গেল। আসলে কাজ করলে কাজের ফল পাওয়া যায় তা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। তা না হলে অনেকদিন চ্যানেলের কার্যক্রম শিথিল থাকার পর যখন কাজ করতে আবারো শুরু করলাম তখন আমার পাশে আবারো নতুন করে দাঁড়াতে শুরু করেছে সাবস্ক্রাইবাররা। সে জন্য খুব তাড়াতাড়ি লাখের ঘরে পৌঁছে গেছি আমরা। এভাবে আমি সাপোর্ট আর ভালোবাসা পেলে আমার চ্যানেলটি খুব তাড়াতাড়ি দেশের এক নম্বর ইউটিউব চ্যানেলে পরিণত হবে।
নন স্টপ প্র্যাঙ্ক নিয়ে দেশে ইউটিউবে সবার আগে আমিই কাজ শুরু করি। সালমান মুক্তাদির ভাইও সে সময় কাজ শুরু করে। তখন তো অনেকে ননস্টপ প্র্যাঙ্ক বুঝতই না। এখন ইউটিউবারদের কাছেই ননস্টপ প্র্যাঙ্ক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সঙ্গে দর্শকদেরও।
আমি ইউটিউব নিয়ে প্রচুর লেখাপড়া করি। প্রচুর নেট ঘাঁটি। অন্য ইউটিউবাররা কী করছে, তাদের কাজ দেখি। আসলে শেখার কোনো শেষ নেই। জানতে হলে শিখতে হবে আর একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে দর্শক কখন, কী চাইছে। ইস্যুগুলো কী ভিত্তিক, সেই ইস্যু নিয়ে কাজ করতে হবে।
দেশের যারা বিগশট ইউটিউবার তারা তো ভালো করছেই। তাদের চিন্তা-চেতনা অনেক বড়। আমি কারো সঙ্গে কোনো প্রতিযোগিতা করি না। তবে আমি নতুন বা পুরনো সবাইকে বলতে চাই, সবাই সবার জায়গা থেকে কাজ করলেই আমাদের দেশে ইউটিউব এবং ইউটিউবাররা প্রতিষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে আমরা যারা কাজ করছি তাদের ইউটিউবকে জানতে হবে, শিখতে হবে। মিছে মিছি যা ইচ্ছে তাই কনটেন্ট আপ করে দিলাম তা না করে স্টাডি করে ভালোমানের এবং মৌলিক কনটেন্ট আপ করে দর্শকের সামনে নিয়ে আসায় ভালো। যে কনটেন্টে কোনো মেসেজ নেই সেটি আসলে আমার কাছে কোনো যুক্ত সঙ্গত মনে হয় না।
প্রথমদিকে আমি জনপ্রিয় হওয়ার জন্য ইউটিউবার হতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেই ভাবনা আমার থেমে গেছে। আমি সে চিন্তা বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ ইউটিউব এত বড় প্ল্যাটফর্ম যার মাধ্যমে মানুষকে অনেক শিক্ষা দেয়া যায় আর আমি সে কারণে এখন ভালো কাজ করতে চাই ইউটিউবে। একটি কথা না বললেই নয়, ইউটিউবে কাজ করি মানুষের সম্মান পাওয়ার জন্য। আপাতত টাকা-পয়সা ইনকামের জন্য ইউটিউবে কাজ করছি না। মানুষের ভালোবাসাই আমার কাছে মুখ্য। মানুষের ভালোবাসা দিয়ে আমি আস্তে আস্তে এগিয়ে যেতে চাই। হয়তো এভাবে আমার অনেকদিন সময় লাগবে তাতেও কোনো সমস্যা নেই আর সম্মান পেতে হলে সম্মানের মতো কাজ করতে হবে। আমার একটাই কথা, ‘যতদিন না তোমার শত্রু তোমার ফ্যান হবে, তত আমি কাজ করে যাব।’
আমার টার্গেট-দেশ নিয়ে কাজ করার, দেশের মানুষকে নিয়ে কাজ করার। সামনে আমি তাই করব। আমি জানি কাজগুলো করতে গেলে অনেক মানুষ অনেক কথা বলবে কিন্তু সেগুলো না শুনে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। মানুষ ইউটিউব থেকে মিডিয়াতে যেতে চায় কিন্তু আমি মিডিয়া থেকে ইউটিউবে এসেছি। বিভিন্ন বিষয়ে সালমান মুক্তাদির এবং আসিফ বিন আজাদ বড় ভাইদের দেখে অনুপ্রেরণা পেয়েছি।
এছাড়া একজন ইউটিউবার হিসেবে আমার সফলতা তখনই হবে যখন আমাকে লাখ লাখ মানুষ চিনবে। লাখ লাখ মানুষের কাছে আমার কাজ প্রশংসা পাবে। কারণ যারা আমাকে ভালোবাসে না তাদের সংখ্যা আমি গুনতে পারব কিন্তু যারা আমাকে ভালোবাসে তাদের সংখ্যা আমি গুনে শেষ করতে পারব না।
আমার টিম মেম্বাররা আমাকে সব সময় শক্তি জোগায়। টিমে আছে দিদার ভাই, রামি, নেহাল, তকিসহ অনেকে। যারা আমাকে ভালোবাসে কিন্তু ফ্রেমকে ভালোবাসে না।
বাবা চেয়েছিল পাইলট বা আর্মির কোনো বড় অফিসার হিসেবে আমি প্রতিষ্ঠিত হই। যখন তিনি দেখেছেন আমার এসবে কোনো আগ্রহ নেই তখন তিনি আমাকে আমার মতো করে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ দিয়েছেন। শুরু থেকেই আগ্রহ মিডিয়াতে আর সে কারণেই আমার নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমিতে ভর্তি হওয়া।
আমি অনেক কিছু ট্রাই করেছি কিন্তু কোনোকিছুই আমাকে টানে না। নাটক, উপস্থাপনা করেছি কিন্তু আমি আমার কাছে খুশি হতে পারি না। অনেকেই ভালো বলে কিন্তু তারপরও কি জানি অভাব মনে হতো আমার। আমি এভাবে ইউটিউব নিয়ে কখনো চিন্তাও করিনি। চ্যানেলটি শুরু হয় ২০১৫ সালে। যখন চ্যানেল শুরু করি একটি ভিডিও আপলোড দেই। অনেকেই ইউটিউবে ভিডিও আপ করছে তাই আমিও করি। তেমন খুব একটা ভিউ হয়নি। প্রথম ভিডিওতে আমার চ্যানেলে ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার হয়। তখন অনেকে প্রেরণা দিত। ইউটিউবে কাজ করছি বলে অনেকে কথা বলত। বলতে পারেন এভাবেই আমার শুরু। তখনো আমি ইউটিউব নিয়ে সিরিয়াস ছিলাম না। সিরিয়াস হই ২০১৬ সালে যখন ওয়ার্ল্ড ট্যুরে যাই। তখন আমার ৫ হাজার সাবস্ক্রাইবার। দেশে ফেরার পর আমি ‘বাংলাদেশি ৪২০’ নামের একটি ভিডিও আপ করি। এরপরই আমার চ্যানেলে ১৪ হাজার সাবস্ক্রাইবার হয়ে যায়। অনেকে এই ভিডিওর জন্য আমাকে ভালো বলতে থাকে। তখন আমি বুঝতে পারি। আমি ইউটিউবে ভালো করতে পারব। এরপর সবারই জানা কি হচ্ছে আর কি করছি।
সাড়ে তিন লাখের বেশি সাবস্ক্রাইবার
তিন লাখ সাবস্ক্রাইবার ছাড়িয়েছে ইউটিউবের বাংলাদেশি চ্যানেল ‘তৌহিদ আফ্রিদী’। বর্তমানে এই চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬শ’র বেশি। ননস্টপ কমেডিয়ান ধাঁচের এই চ্যানেলটিতে এখন পর্যন্ত ভিউ হয়েছে ২ কোটি ৯১ লাখ ৫৪ হাজারের বেশি। ৬৬টির বেশি ভিডিও আপলোড করে খুব কম সময়ের মধ্যে লাখ সাবস্ক্রাইবার ছড়িয়েছে এই চ্যানেল। পাচ্ছে জনপ্রিয়তা, হচ্ছে জনপ্রিয়।

সিলভার প্লে বাটন লাভ
এক লাখ সাবস্ক্রাইবার হবার পরও ইউটিউব থেকে ঘোষণা আসে তার সিলভার প্লে বাটন পাবার। সিলভার প্লে বাটন হাতে আসার পর আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে যায়। এখন তো এগিয়ে যাবার পালা। তরুণ এই ইউটিউবার বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করছে প্রতিনিয়ত ইউটিউবের বিশাল প্ল্যাটফর্মে।

ইউটিউব অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ
তৌহিদ আফ্রিদীকে ইউটিউব অফিস থেকে ডাকা হয়েছে। ইউটিউব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিং করার জন্য। নতুনদের শেখানোর জন্য, গ্রুমিংয়ের জন্য তিনি এই প্রস্তাব পেয়েছেন। ইউটিউব থেকে নিয়মিত যোগাযোগ করা হয় তার সঙ্গে। ভিডিও কল, চ্যাট ও ফোনে যোগাযোগ চলে দুইপক্ষের। ইউটিউবের হয়ে কাজ করতে আফ্রিদী রাজি হলেই স্পেশালি কেয়ার পাবেন তাদের কাছ থেকে।
উল্লেখ্য, তৌহিদ উদ্দিন আফ্রিদী। তবে তৌহিদ আফ্রিদী নামেই এখন বেশি পরিচিত। জন্ম ১৯৯৮ সালের ৩ জানুয়ারি। ইংল্যান্ডে ছিলেন ৭ বছর। ক্যানবুক স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন তিনি। স্কুলটিতে প্লে গ্রুপ থেকে তার পড়াশোনা শুরু। ও লেভেল দিয়ে এ লেভেলও করেছেন ইংল্যান্ডে। বর্তমানে নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমি থেকে মিডিয়াতে পিএইচডি করছেন। ৮ বছর লাগবে পিএইচডি করতে। ২০২৫ সালে তার পড়াশোনা শেষ হবে।
আফ্রিদীর ইউটিউব চ্যানেল: https://www.youtube.com/TAWHIDAFRIDI

তৌহিদ আফ্রিদি কত টাকা আয় করেন | গার্লফ্রেন্ড | লেখাপড়া | বয়স | অজনা তথ্য | Tawhid Afridi lifestyle তৌহিদ আফ্রিদি কত টাকা আয় করেন | গার্লফ্রেন্ড | লেখাপড়া | বয়স | অজনা তথ্য | Tawhid Afridi lifestyle Reviewed by lifestyle top10 on 10/17/2018 07:46:00 AM Rating: 5

5 comments:

  1. Replies
    1. অনেক ভালোলাগল তার সমর্পকে যেনে

      Delete
  2. Tawhid Afridi এর নতুন ভিডিও এবং তথ্য পেতে ক্লিক করুন

    ReplyDelete

Powered by Blogger.